সালাতে মন স্থির রাখার কতিপয় উপায়:

সালাতে মন স্থির রাখার কতিপয় উপায়:

১) সালাতের প্রস্তুতি নিয়ে শান্ত মনে আগেভাগে মসজিদে আসা।

২) সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা।
আনাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﺍﺫﻛﺮِ ﺍﻟﻤﻮﺕَ ﻓﻲ ﺻﻼﺗِﻚ ، ﻓﺈﻥَّ ﺍﻟﺮﺟﻞَ ﺇﺫﺍ ﺫﻛﺮ ﺍﻟﻤﻮﺕَ ﻓﻲ ﺻﻼﺗِﻪ ﻟﺤﺮﻱٌّ ﺃﻥ ﻳُﺤﺴﻦَ ﺻﻼﺗَﻪ ”সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ কর। কেননা, মানুষ যখন সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করে তখন সে তার সালাতকে সুন্দর ভাবে আদায় করতে সক্ষম হয়। ” (সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ/২৮৩৯)

৩) “আমি আল্লাহকে দেখছি বা তিনি আমাকে দেখছেন” এই অনুভূতি মনে জাগ্রত রাখা।

৪) এ কথা স্মরণ করা যে, আল্লাহ তায়ালা সালাতে বান্দার প্রতি উত্তর করে থাকেন।

৫) এ কথা স্মরণ রাখা যে, সালাতে মূলত: আল্লাহর সাথে চুপিসারে কথা বলা হয়।

৬) সালাতে পঠিত দুয়া-তাসবীহ ও সূরা-কিরাতের অর্থ অনুধাবন করা।

৭) খাবার উপস্থিত রেখে বা পেশা-পায়খানা চেপে সালাত আদায় না করা।
কেননা, এতে মনোযোগ বিঘ্নিত হয়।

৮) সেজদায় বেশী বেশী আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা।
রাসূল সা. বলেছন, ( ﺃﻗﺮﺏ ﻣﺎ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻌﺒﺪ ﻣﻦ ﺭﺑﻪ ﻭﻫﻮ ﺳﺎﺟﺪ ﻓﺄﻛﺜﺮﻭﺍ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ‏) ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ বান্দা যখন সিজদায় থাকে তখন সে আল্লাহর সব চেয়ে সন্নিকটে থাকে। অত:এব, তোমরা (সিজদা অবস্থায়) অধিক পরিমানে দুয়া কর।” (সহীহ মুসলিম) , তবে একাকী সালাত, নফল, সুন্নত, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিজদায় অধিক পরিমাণে দুয়া করা ভালো। কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দুয়া সমূহ অধিক হারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়া নিজের মাতৃভাষায়ও আল্লাহর নিকট নিজের কামনা-বাসনা তুলে ধরে দুয়া করা যাবে।

৯) হাই আসলে মুখে হাত দিয়ে যথা সম্ভব তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা।

১০) সিজদার স্থানে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা এবং অন্য দিকে দৃষ্টিপাত না করা।

১১) ভয়-ভীতি ও ধীর স্থিরতা সহকারে সালাত আদায় করা।

১২) শয়তানের উপস্থিতি টের পেলে চুপি স্বরে আউযুবিল্লাহ.. পাঠ করা
ও বাম দিকে অতি হালকা ভাবে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করা।
আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম
ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻗﺪ ﺣﺎﻝ ﺑﻴﻨﻲ ﻭﺑﻴﻦ ﺻﻼﺗﻲ ﻭﻗﺮﺍﺀﺗﻲ ﻳﻠﺒﺴﻬﺎ ﻋﻠﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺫﺍﻙ ﺷﻴﻄﺎﻥ ﻳﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺧﻨﺰﺏ ﻓﺈﺫﺍ ﺃﺣﺴﺴﺘﻪ ﻓﺘﻌﻮﺫ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻣﻨﻪ ﻭﺍﺗﻔﻞ ﻋﻠﻰ ﻳﺴﺎﺭﻙ ﺛﻼﺛﺎً
ﻗﺎﻝ : ﻓﻔﻌﻠﺖ ﺫﻟﻚ ﻓﺄﺫﻫﺒﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻲ . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
হে আল্লাহর রাসূল, শয়তান আমার সালাত ও কেরাআতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে দেয়। তিনি বললেন:
এটি হল শয়তান। যার নাম খিনযাব। তুমি যদি এমনটি অনুভব কর, তবে “আউযু বিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ কর এবং তোমার বাম পাশে তিনবার হালকা ভাবে থুথু নিক্ষেপ কর।”
তিনি বলেন, আমি এমনটি করায় আল্লাহ তায়ালা আমার এ সমস্যা দূর করে দিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম)

উল্লেখ্য যে, শরীর বা কাঁধ বাম দিকে ঘুরার প্রয়োজন নাই। কেবল মাথাটা সামান্য বাম দিকে নিয়ে খুব হালকা ভাবে থুথু ফেলার মত করবে। (এতে মুখ থেকে পানি নির্গত হবে না।) এমনটি করলে শয়তান লাঞ্ছিত অবস্থায় পলায়ন করবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

বি: দ্র: প্রত্যেকটি পয়েন্টরে পেছনে দলীল বিদ্যমান রয়েছে। এখানে যে সকল পয়েন্টের ব্যাপারে একাধিক প্রশ্ন এসেছে শুধু সেগুলোর সামান্য ব্যাখ্যা ও দলীল সংযুক্ত করা হল।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form