নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি ৫ ধরনের হয়ে থাকে। এই ধরন গুলি কি?


ইমাম ইবনু ক্বাইয়িম আল জাওযিয়া (রহ:) বলেন-সালাত আদায় করতে গিয়ে মানুষ ৫ শ্রেণীতে বিভক্ত হয়:

১- معاقب (আল্লাহর ভর্ৎসনাপ্রাপ্ত) যার সালাতের কারণে সে আল্লাহর ভর্ৎসনা ও সাজার উপযোগী হয়।
২- محاسب (আল্লাহর জবাবদিহিতার মুখোমুখি) যার সালাতের সালাতের ব্যপারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
৩- مكفر عنه (ক্ষমাপ্রাপ্ত) যার সালাতের বিনিময়ে আল্লাহ তার পাপরাশী ক্ষমা করে দেন।
৪- مثاب (সাওয়াব অর্জনকারী) যে তার সালাতের বিনিময়ে আল্লাহর কাছ থেকে সওয়াব বা পুণ্য অর্জন করে।
৫- مقرب (আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত) যে তার সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে।

✅আল্লাহর ভর্ৎসনাপ্রাপ্ত মুসুল্লী হলেন তিনি, যে সালাতের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন না। ওজু এবং সালাতের রোকন, ওয়াজিব ও শর্তসমূহ যথানিয়মে পালন করেন না। তিনি সালাতের মাধ্যমে ভর্ৎসনা ও সাজার উপযুক্ত হন।

✅ আল্লাহর জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবেন সে মুসুল্লী, যিনি সালাতের রোকন, ওয়াজিব এবং শর্তসমূহ যথাভাবে পালন করেন ঠিক; কিন্তু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সালাতে যা বলেন বা করেন তিনি সবই অবচেতন মনে। সালাম ফিরানো পর্যন্ত পুরো সময়জুড়ে তিনি অন্য জগতে বিচরণ করে বেড়ান। বরং কোন কাজের তাগাদায় সালাত থেকে নিষ্কৃতি লাভের জন্য ছটফট করতে থাকেন।

✅সেই মুসুল্লী তার সালাতের মাধ্যমে ক্ষমাপ্রাপ্ত হন, যার সালাতের রোকন ওয়াজিব ও শর্ত সবই ঠিক থাকে। সালাত শুরুর পর থেকে তিনি প্রবৃত্তি ও শয়তানের সাথে লড়াই করে মনযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করেন। আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখেন যেন শয়তান তার সালাত নষ্ট করতে না পারে। এক কথায় তিনি সালাতের মান সুন্দর রাখার জন্য নফসের সঙ্গে জিহাদে অবতীর্ণ হন। এ ধরণের মুসুল্লী সালাতের বিনিময়ে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হন।

✅সালাতের বিনিময়ে ক্ষমার পাশাপাশি বিশেষ সওয়াব অর্জনকারী মুসুল্লী হলেন তিনি, যে আরকান, ওয়াজিবাত ও শর্তসমূহ এবং মনযোগের সাথে সালাত আদায় করতে সক্ষম হন।

✅সর্বোচ্চ শ্রেণীর মুসুল্লী হলেন, যার সালাতের মাধ্যমে তিনি আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হন। এই শ্রেণীর মুসুল্লীরা সালাতের রোকন ওয়াজিব এবং শর্ত ও খুশু (মনযোগ) পূর্ণরূপে পালনের পাশাপাশি আল্লাহকে হাজির জেনে ইবাদত করেন। চতূর্থ প্রকার মুসুল্লীর সাথে এই প্রকার মুসুল্লীর ব্যবধান এখানে। তাদের খুশু থাকে কিন্তু ‘যেন আল্লাহকে দেখছেন’ সেই ধ্যান ও কল্পনা নিয়ে সালাত আদায় করতে পারেন না। পক্ষান্তরে শেষ প্রকারের মুসুল্লী অন্যসব যথাযথভাবে পালনের সাথে সাথে আল্লাহকে ‘সম্মুখে জেনে’ ইবাদত করেন। আর সে কারণে তাদের সালাত আল্লাহর নৈকট্য এনে দেয়।

সূত্র: ইবনে ক্বাইয়িম আল জাওযিয়া রচিত আল ওয়াবিলুস ছায়্যিব

জেনে নিন- ইসলামিক প্রশ্নোত্তর পেজ থেকে

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form