প্রশ্ন: গোপন শিরক কি এবং এর ভয়াবহতা কতটুকু?


উত্তর:

ক. পরিচয়:

যে শিরকটি অন্তর বা নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত (যা বাহ্যিকভাবে দেখা যায় না) সেটিকে শিরকে খাফী বা গোপন শিরক বলে।

খ. উদাহরণ:

যেমন লোক দেখানো, প্রসিদ্ধি অর্জন বা দুনিয়ার স্বার্থ হাসিলে উদ্দেশ্যে কোন আমল করা। লোক দেখানের জন্য সুন্দরভাবে নামায আদায় করা, দান-সদকা করা এ উদ্দেশ্যে যে, মানুষ তাকে দানশীল বলবে, মানুষের বাহবা ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে সুকণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করা, গনীমতের মাল লাভ বা বীর খেতাব পাওয়ার উদ্দেশ্যে জিহাদ করা অথবা শুধু অর্থ কামাইয়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের ইমামতি করা ইত্যাদি।

অনুরূপভাবে আশা, ভয়, তাওয়াক্কুল (ভরসা), ভালাবাসা  ইত্যাদি ক্ষেত্রেও শিরক হয়। এ বিষয়গুলোও যেহেতু অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত সেহেতু এগুলো যেভাবে আল্লাহর প্রতি পোষণ করা কতর্ব্য সেভাবে যদি কোন পীর, কবরে শায়িত ওলি-আওলিয়া ইত্যাদির প্রতি পোষণ করা হয় তাহলে তা শিরকে খাফী বা গোপন শিরকে পরিণত হবে।

গ. ভয়াবহতা:

এটি অন্তর ও উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্ক হওয়ার কারণে এর ভয়াবহতা অনেক বেশি। কেননা খুব নীরবে-নিভৃতে এটি হৃদয়ে এসে বাসা বাধে যা অনেক সময় মানুষ টের পায় না।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكَ الأَصْغَرَ " ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، وَمَا الشِّرْكُ الأَصْغَرُ ؟ قَالَ : " الرِّيَاءُ ،
“তোমাদের উপর আমি যে জিনিসের ভয় সবচেয়ে বেশী করছি তা হল শিরকে আসগর। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রসূলাল্লাহ! শিরকে আসগর কি? তিনি বললেন: রিয়া (লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করা) ”

[আহমদ ৩/৩০,ইবনে মাজাহ হা নং৫২০৪, তাবারানী, বাগাভী]

যদি কোন আমলে রিয়া তথা লোক দেখানোর উদ্দেশ্য সংমিশ্রিত থাকে, তাহলে আল্লাহ তা বাতিল করে দেন।

আল্লাহ বলেন:
فَمَنْ كَانَ يَرْجُوا لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
“অতএব যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে ” [সূরা কাহাফ ১১০]


উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form