নাবালেগ শিশু আজান দিলে কি আজান শুদ্ধ হবে?

প্রশ্ন: নাবালেগ শিশু আজান দিলে তা কি যথেষ্ট হবে?
উত্তর:
যদি বুঝমান ও বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন কোন বালক (যে বয়সে বাচ্চাদেরকে সালাতের আদেশ দেয়া হয়েছে। তা হল সাত বছর) আজান দেয় তাহলে তা যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। এটি আলেমদের সর্বসম্মত অভিমত।

সম্মনিত ফকিহগণ উল্লেখ করেছেন, আজানের শর্ত তিনটি। যথা:
১) মুসলিম হওয়া।
২) ছেলে/পুরুষ হওয়া।
৩) জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া।

সুতরাং এ বয়সের কোন বুঝমান ও বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন বালক যদি আজান দেয় তাহলে তা সহিহ হবে। এর চেয়ে কম বয়সী শিশুর আজান গ্রহনযোগ্য নয় এবং তা যথেষ্ট হবে না। কারণ আজান ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দশন-যার মাধ্যমে সালাতের সময়ের হওয়ার কথা মানুষ জানতে পারে।
এ মর্মে হাদিস হল,
عن عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ قَالَ : " كَانَ عُمُومَتِي يَأْمُرُونَنِي أَنْ أُؤَذِّنَ لَهُمْ وَأَنَا غُلَامٌ لَمْ أَحْتَلِمْ ، وَأَنَسُ بْنُ مَالِكٍ شَاهِدٌ، فلَمْ يُنْكِرْ ذَلِكَ " .
আব্দুল্লাহ ইবনে আবি বকর বিন আনাস বলেন,“আমার চাচারা আামকে আজান দেয়ার আদেশ করলে (আমি আজান দিতাম)। সে সময় আমি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক ছিলাম। আনাস বিন মালিক রা. আমাকে দেখলেও তিনি প্রতিবাদ করেন নি।” (ইবনুল মুনজির আওসাত গ্রন্থে ৩/১৭৬)
তবে প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি আজান দিলে সবচেয়ে ভালো তাতে কোন সন্দেহ নাই।
جاء في " فتاوى اللجنة الدائمة - المجموعة الثانية " (5/48) : " الأفضل والمستحب : أن يكون المؤذن بالًغا ؛ لأنه بالأذان يُخْبِر عن دخول مواقيت الصلاة ، ووقت طلوع الفجر وغروب الشمس في الصيام .
وأما أذان الصبي ، إذا كان مميِّزًا ، وكان يعتمد على بالغ ، أو كان يؤذِّن في مثل مساجد المدينة ، بحيث يؤذِّن غيرُه ؛ فالصحيح جواز ذلك ، وصِحَّة أذانه " انتهى .
আল্লাহু আলাম

প্রশ্ন: আজানের সময় কি কথা বলা ঠিক?

উত্তর:
আজান এর সময় উত্তম হল, মনোযোগ সহকারে আজান শোনা এবং আজানের জবাব দেয়া। কেননা এটি অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ কাজ। তবে যদি বিশেষ প্রয়োজনে কথা বলার দরকার হয় তাহলে এতে কোনও আপত্তি নেই। সুতরাং আজান চলাকালীন সময়ে দরকারি কথা বলা, হাঁচির জবাব দেওয়া, সালামের উত্তর দেওয়া বা বিশেষ কোনো কাজ করা ইত্যাদি জায়েজ আছে ইনশাআল্লাহ।

আযানের সময় আযানের জবাব ছাড়াও অন্য কথা বলা জায়েজ হওয়ার পক্ষে এ হাদিসটি প্রযোজ্য:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يُغِيرُ إِلاَّ عِنْدَ صَلاَةِ الْفَجْرِ فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا أَمْسَكَ وَإِلاَّ أَغَارَ فَاسْتَمَعَ ذَاتَ يَوْمٍ فَسَمِعَ رَجُلاً يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ عَلَى الْفِطْرَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ خَرَجْتَ مِنَ النَّارِ
আনাস ইবনে মালিক রা. হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ফজরের সময়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কোন জনপদে) নৈশ হামলা করতেন। তিনি আযান শুনলে হামলা হতে বিরত থাকতেন, অন্যথায় হামলা করতেন। একদিন তিনি কানকে সজাগ রাখলেন। 
তিনি একজন লোককে 'আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ বলতে শুনে বললেন: “ফিতরাতের (ইসলামের) উপর আছে।”
ঐ লোকটি আবার বলল: “আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই)। 
তিনি বললেনঃ “তুমি জাহান্নাম হতে বেরিয়ে গেলে।” (সহীহ, সহীহ আবু দাউদ (২৩৬৮), মুসলিম)
আল্লাহু আলাম।


-------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
AbdullaahilHadi
Daee, at jubail dawah & guidance center.KSA

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form