মৃত ব্যক্তিকে কাফনানোর পদ্ধতি

 * প্রথমতঃ কাপড়ের মাপ নিম্নরূপঃ

মাইয়্যেতের দেহের প্রস্থ ৩০সেমি হলে কাফনের (লেফাফার) প্রস্থ ৯০ সেমি হতে হবে। এইভাবে ৪০ সেমির ক্ষেত্রে[১২০ সেমি, ৫০ সেমির ক্ষেত্রে ১৫০ সেমি, ৬০ সেমির ক্ষেত্রে ১৮০ সেমি; অর্থাৎ ৩ গুণ হবে। মাইয়্যেতের দেহের দৈর্ঘ্য ১৮০ সেমি হলে লেফাফার দৈর্ঘ্য এর চেয়ে ৬০ সেমি অতিরিক্ত হতে হবে। তদনুরূপ ১৫০ সেমির ক্ষেত্রে[৫০ সেমি, ১২০ সেমির ক্ষেত্রে ৪০ সেমি এবং ৯০ সেমির ক্ষেত্রে[৩০ সেমি কাপড় বেশী লম্বা লাগবে।

*দ্বিতীয়তঃ কাফনানোর পদ্ধতিঃ

পদ্ধতি নং -১

মাইয়্যেতকে সমান মাপের তিনটি কাপড়ে (লেফাফায়) কাফনানো হবে। কাফনদাতা পরস্পর তিনটি কাপড়কে বিছিয়ে দেবে। এর উপর প্রয়োজনে (মলদ্বার হতে নাপাকী বের হতে থাকলে) ১০০/২৫ সেমি কাপড়কে দুই মাথায় ফেড়ে নিয়ে লেঙ্গট বানিয়ে মাইয়্যেতের পাছার স্থানে রাখবে। (মুহরিম না হলে) তার উপর মিস্ক, কর্পূর বা অন্য কোন সুগন্ধি মিশ্রিত তুলো রাখবে। অতঃপর লাশকে পর্দার সাথে এনে তার উপর ধীরভাবে রাখবে। এখানেও কলেমার যিকর নেই।

(মুহরিম না হলে) মাইয়্যেতের সিজদার স্থান সমুহে, বগলে, দুইরানের মধ্যবর্তী ইত্যাদি স্থানে আতর লাগিয়ে দেবে।

মাইয়্যেতের চোখে সুরমা লাগানোর ব্যাপারে কোন দলীল দেখলাম না। সুতরাং তা ব্যবহার না করাই উত্তম।

মাইয়্যেতের হাত দুটিকে পাঁজরের পার্শ্বে লম্বালম্বি করে ফেলে রাখবে। (অতঃপর লেঙ্গটটিকে সুবিধামত উভয় রানের সাথে বেঁধে দেবে।) এরপর ডান দিকের লেফাফার আঁচল ধরে ডান দিক এবং বাম দিকের আঁচল নিয়ে লাশের বাম দিক জড়িয়ে দেবে। এই অবসরে সতর্কতার সাথে লাশের লজ্জাস্থানের উপরে পর্দাটিকে টেনে বার করে নেবে।

এইভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় লেফাফাকে প্রথমে ডান দিকে তারপর বাম দিকে জড়িয়ে দেবে। অতঃপর মাথার দিকের প্রথম বাঁধনে গঁট দেবে। তারপর পায়ের দিকের বাঁধন বাধবে এবং দেহের মাঝে প্রয়োজন মত ১ থেকে ৫টা বাধন দেবে। বাঁধনের গটগুলি হবে লাশের বাম দিকে। এতে কবরে লাশ কেবলা মুখে রেখে বাধনগুলি খুলতে সুবিধা হবে।

প্রকাশ যে, মুহরিমের চেহারা ও মাথা ঢাকা চলবে না। কারণ, প্রিয় নবী (ﷺ) পূর্বোক্ত সওয়ারী-পিষ্ট মুহরিমের ব্যাপারে বলেছিলেন, ওর দেহে খোশবু লাগাবে না, ওর মাথা ও চেহারা ঢাকবে না। কারণ, কিয়ামতের দিন তালবিয়্যাহ পড়া অবস্থায় (মুহরিম) হয়েই) পুনরুত্থিত হবে।” তবে মুহরিম মহিলা হলে কাফনে মাথা অবশ্যই জড়াতে হবে। কিন্তু মুখ না জড়িয়ে সাধারণভাবে উপরে পর্দা করতেই হবে। (মুহাল্লা)

পদ্ধতি নং -২

তিন কাপড়ের একটি হবে লুঙ্গী, একটি কামীস (জামা) এবং অপরটি লেফাফা। প্রথমে লেফাফা, এর উপর কামীস, তার উপর লুঙ্গী বিছাতে হবে। ডবল ভাঁজের কাপড় নিয়ে মাঝখানে গোল করে কেটে মাথা প্রবেশ করানোর মত জায়গা করে কামীসের নিম্নাংশ লুঙ্গীর নীচে বিছাবে এবং উর্ধাংশ মাথার দিকে গুটিয়ে রেখে নেবে। কামীস ও লুঙ্গী পায়ের গাটের উপর অবধি লম্বা হবে। এর উপর ধীরভাবে লাশ শুইয়ে প্রথম পদ্ধতির ন্যায় সবকিছু করবে। প্রথমে লুঙ্গী জড়াবে তারপর কামীসের ফাঁক দিয়ে মাথা গলিয়ে কামীসের উপর দিক লাশের বুক ও পায়ের উপর বিছিয়ে দেবে। অতঃপর লেফাফা জড়িয়ে উক্তরূপ বাধন বাধবে। এরূপ কাফনের কথা আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস প্রমুখাৎ প্রমাণিত। (মুআত্তা মালিক, শারহে যুরকানী ৫২৬নং)।

তবে ১ম নং পদ্ধতি মতে কাফন দেওয়াই উত্তম। কারণ, মহানবী (ﷺ)-কে উক্তরূপে কাফনানো হয়েছিল।


https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=143&section=1981

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form