কুরবানী করা ওয়াজীব নয় বরং সুন্নাত.
১) সাইয়েদুনা আবূ সারীহা রাযিআল্লাহু আনহু হ’তে রেওয়ায়াত আছে যে, (সাইয়েদুনা) আবূ বকর (আছ-ছিদ্দীক্ব) এবং (সাইয়েদুনা) ওমর রাযিআল্লাহু আনহু উভয়ই আমার পড়শী ছিলেন। আর উভয়ই কুরবানী করতেন না (বায়হাক্বী, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আছার হা/৫৬৩৩, ৭/১৯৮, এর সনদ হাসান; নববী একে হাসান বলেছেন, আল-মাজমূ শারহুল মুহাযযাব গ্রন্থে ৮/৩৮৩;
ইবনে কাছীর বলেছেন, এর সনদটি ছহীহ, মুসনাদুল ফারূক্ব ১/৩৩২)।
নোট :- কুরবানী যদি ওয়াজীব হতো তাহলে কখনোই আবু বাকর এবং উমার (রাযি) কুরবানী করা ছাড়তেন না।
২) সাইয়েদুনা আবূ মাসঊদ উক্ববাহ বিন আমের আনছারী রাযিআল্লাহু আনহু বলেছেন,
আমি এই ইচ্ছা করেছি যে, কুরবানীকে বর্জন করি। যদিও আমি তোমাদের মোকাবেলায় (সম্পদের দিক দিয়ে) স্বচ্ছল। এই আশঙ্কায় যে, কোন মানুষ একে ওয়াজিব অনুধাবন করে ফেলে’ (বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা ৯/২৬৫, সনদ শক্তিশালী)।
৩) ইবনু উমার (রাযী) কুরবানী সুন্নত বলেছেন (ছহীহ বুখারী হা/৫৫৪৫-এর পূর্বে অধ্যায় দেখুন)
৪) ইমাম মালেক রহেমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘কুরবানী করা সুন্নাত, ওয়াজিব নয়। এবং যে ব্যক্তি ক্ষমতা রাখে সে কুরবানী করা বর্জন করুক তা আমি পসন্দ করি না’ (আল-মুওয়াত্ত্বা হা/১০৭৩, ২/৪৮৭)।
৫) ইমাম শাফেঈ রহেমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘কুরবানী করা সুন্নাত। আমি একে বর্জন করা পসন্দ করি না’ (কিতাবুল উম্ম ১/২২১)।
৬) উপরন্তু দেখুন ইবনে কুদামার আল-মুগনী (মাসআলা-৭৮৫১, ৯/৩৪৫)।
৭) ইমাম বুখারী বলেছেন, ‘কুরবানীর সুন্নাত-এর অনুচ্ছেদ’ (ছহীহ বুখারী হা/৫৫৪৫-এর পূর্বে)।
সাইয়েদুনা আবূ হুরায়রাহ রাযিআল্লাহু আনহু হ’তে বর্ণনা আছে যে, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির নিকটে ক্ষমতা আছে এবং সে কুরবানী না করে তবে সে যেন আমাদের মুছাল্লায় না আসে (সুনানে ইবনে মাজাহ হা/৩১২৩, সনদ হাসান; হাকেম একে ছহীহ বলেছেন ২/২৩২; যাহাবী তাকে সমর্থন করেছেন; আহমাদ এটি বর্ণনা করেছেন ২/৩২১)।
নোট :- এই রেওয়ায়াতের মধ্যে আব্দুল্লাহ বিন আইয়াশ আল-মিছরী হ’লেন বিতর্কিত রাবী।
যার উপর কিবারে আলেমগণ সমালোচনা করেছেন। এবং জমহুর ছিক্বাহ বলেছেন। প্রায় পাঁচ-ছয়জনের মোকাবেলা রয়েছে।
উপরোল্লিখিত রেওয়ায়াতটির উদ্দেশ্য এই যে, যে ব্যক্তি কুরবানীকে গুরুত্বহীন এবং তুচ্ছ করতে গিয়ে ক্ষমতা থাকার পরও কুরবানী করে না। তার উচিৎ মুসলমানদের ঈদগাহ হ’তে দূরে থাকা। অর্থাৎ এই বর্ণনাটি কুরবানীর ‘মুসতাহাব’ এবং ‘সুন্নাত’ হওয়ার উপর ধর্তব্য হয়।