জীবন ঘনিষ্ঠ কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - পর্ব: ১৮
➖➖➖➖
প্রশ্ন : কেউ যদি একাকী ফরজ সালাত আদায় করে-যেমন মাগরিব, এশা ও ফজরের ওয়াক্তে-তাহলে সে সময় কি উচ্চ আওয়াজে সুরা-কিরাআত পাঠ করতে হবে না কি না করলেও চলে?
উত্তর : জেহরি নামাজ তথা যেসকল নামাজে কিরাআত উঁচু করতে হয়-যেমন, মাগরিব, ইশা এবং ফজরের নামাজ- কিরাআত উঁচু করে পড়া সুন্নত-চাই জামাআতের সাথে পড়া হোক অথবা একাকী পড়া হোক।
তবে নীরবে কিরাআত পাঠ করলেও সালাত শুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ।
▬▬▬▬
প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির নামে কি উমরা করা যাবে? অনেকে উমরা বা হজ শেষে মৃত বা জীবিত ব্যক্তিদের পক্ষে তাওয়ার করে এটা কি ঠিক ?
উত্তর:
■ কারো পক্ষ থেকে -চাই সে জীবিত হোক বা মৃত হোক- তওয়াফ করা বৈধ নয়। কেননা, এর বৈধতার পক্ষে কোন দলিল নাই।
■ তবে যে কেউ নিজের জন্য যত খুশি তওয়াফ করবে এবং তওয়াফের সময় বা তওয়াফের পরে যে কারো জন্য যখন খুশি দোয়া করা করতে পারে।
■ মৃত মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন বা যে কোন মুসলিমের পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ বা উমরা আদায় করা জায়েজ রয়েছে। তবে শর্ত হল, যে ব্যক্তি বদলি আদায় করবে তাকে ইতোপূর্বে নিজের হজ্জ বা ওমরা আদায় করতে হবে। মৃত্যু ব্যক্তির পক্ষ থেকে উমরা আদায়ের জন্য একমাত্র নিয়ত ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই।
■ আর জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ্জ বা উমরা আদায় করা যাবে এই শর্তে যে, যার পক্ষ থেকে তা আদায় করা হবে সে ব্যক্তি আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার পরও অতিবৃদ্ধ বা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে মক্কায় আসতে সক্ষম নয়।
এ ক্ষেত্রেও যে ব্যক্তি বদলী উমরা বা হজ্জ আদায় করবে তাকে পূর্বে নিজের উমরা বা হজ্জ সম্পাদন করা আবশ্যক। অন্যথায় তার বদলী আদায় শুদ্ধ হবে না।
▬▬▬▬
প্রশ্ন: একজন স্বল্প জ্ঞানসম্পন্ন সাধারণ মুসলমান কোরআন হাদিস তেমন বোঝে না। সে কীভাবে বুঝবে যে, কোন আলেম কোরআন সুন্নাহর অনুকূলে হক কথা বলছেন?
এটা বিচারের কী কোনও সহজ মানদণ্ড ইসলামে আছে ?
উত্তর : যে ব্যক্তি কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না তার কর্তব্য, দীনি মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে বড় ও বিশ্বস্ত আলেমদের কে জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া এবং তদনুযায়ী আমল করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
"অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।"
-Sura An-Nahl - ayat-43
তবে যে আলেমকে মানুষ প্রশ্ন করবে তার কর্তব্য, যথাসম্ভব দলীল-প্রমাণ সহকারে সুন্দরভাবে প্রশ্নকারীকে বুঝিয়ে দেয়া।
যেহেতু সাধারণ মানুষ ভালো-মন্দ ও সঠিক-বেঠিক নির্নয় করার যোগ্যতা রাখে না সেহেতু তার জন্য তা আবশ্যক নয়।
▬▬▬▬
প্রশ্ন: কাপড়ে বীর্য / মনি লাগার পর যদি কেউ এটি পানি দিয়ে পরিষ্কার / না ধুয়ে ফেলে রাখে এবং পরবর্তীতে অনেক সময় অতিবাহিত হবার পর শুকানো অবস্থায় পরিধান করে সালাত আদায় করে, সেক্ষেত্রে কি সালাত হবে?
উত্তর : বীর্য পাক নাকি নাপাক এ বিষয়ে সম্মানিত ইমামদের মাঝে দ্বিমত রয়েছে। তবে অগ্রাধিকার যোগ্য মত হল, তা পাক। (এ বিষয়ে আমাদের অন্য একটি পোস্ট রয়েছে)
সুতরাং কাপড়ে বীর্য লাগলে তা ধৌত করা আবশ্যক নয় বরং মুস্তাহাব।
মতবিরোধ থেকে বাঁচার স্বার্থে ধুয়ে পরিষ্কার করাই উত্তম।
বীর্য লাগা কাপড় দীর্ঘদিন থাকলেও তার প্রভাব, চিহ্ন ইত্যাদি অবশিষ্ট থেকে যায়। সুতরাং দীর্ঘ দিন পরেও তা পানি দ্বারা ধৌত করে ফেলা উত্তম।
আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।
বি:দ্র: কোন বিষয় অস্পষ্ট থাকলে বা দলীলের প্রয়োজন হলে শাইখের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হল”
➖➖➖➖➖➖➖➖
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, ksa