প্রশ্ন: মহিলা ডাক্তারের জন্য কি পুরুষ রোগীর চিকিৎসা করা বৈধ হবে? কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

জীবন ঘনিষ্ঠ কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর- পর্ব: ১৯
➖➖➖➖
ঋণ নেয়ার পর পরিশোধ করতে অক্ষম হওয়ার কারণে যদি আমি যাকাত হিসেবে ঋণ মওকুফ করে দেই তাহলে কি যাকাত আদায় হবে?

প্রশ্ন: এক ভাই আমার কাছ থেকে কর্জে হাসানা নিয়েছিল পাঁচ বছর আগে দুই সপ্তাহের কথা বলে। তারপর থেকে সে টাকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন তারিখ করেও দেয় না।  সে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে আমাকে এড়িয়ে চলছে। তাকে মেসেজ দিল সে মেসেজ দেখেও কোন উত্তর দেয় না। পরবর্তীতে আমি এক ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারছি, তার আর্থিক অবস্থা নাকি একটু খারাপ। কিন্তু আমি জানি না, এটা কতটুকু সত্য। 
এখন প্রশ্ন হল, আমি প্রতি বছর যে যাকাত দেই তা যদি ওই ভাইকে এ ভাবে বলে দেই যে, আপনার কাছে আমার পাওনা টাকা টা যাকাত হিসেবে আপনাকে দিয়ে দিলাম। অথবা আমি যদি মুখে তাকে সরাসরি কিছু না বলে শুধু আমার অন্তরে নিয়ত রেখে শুধু উনাকে বললাম যে, আমি আপনাকে টাকাটা মাফ করে দিয়েছি। এ ভাবে কি যাকাত আদায় হবে?
উত্তর : 
কাউকে ঋণ দেয়ার পর সে যদি ঋণ দিতে অপারগ হয়ে যায় বা আর্থিক সমস্যায় থাকে তাহলে ঋণদাতা যদি উক্ত পরিমাণ অর্থ তাকে যাকাত দেওয়ার নিয়ত করে নেয় অথবা তাকে বলে দেয় যে, এটা তোমাকে যাকাত হিসেবে দিয়ে দিলাম তাহলে তাতে যাকাত আদায় হবে কি না-এ ব্যাপারে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কথা হল, এতে যাকাত আদায় হবে না। এটিই জুমহুর বা অধিকাংশ ওলামার অভিমত। এর একটি কারণ হল, যাকাতের হকদার ব্যক্তিকে যাকাত প্রদানের সময় যাকাতের নিয়ত থাকা শর্ত। কিন্তু এখানে ঋণগ্রহীতাকে অর্থ দেয়ার সময় যাকাত দেয়ার নিয়ত ছিল না বরং নিয়ত ছিল কর্জ দেয়া।

তবে সে সেই দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাকে পৃথকভাবে যাকাত দেয় তাহলে কোনও আপত্তি নাই। সে এই যাকাত নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারে।
অনুরূপভাবে সে যদি ঋণদাতার পুরোটা বা আংশিক ঋণ মওকুফ করে দেয় বা ঋণ পরিশোধের আরও সময় দেয় তাহলে এতে বিশাল সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ। 
আল্লাহু আলাম।                               
▬▬▬▬
প্রশ্ন : যারা তাওহীদ স্বীকার করে নি তারা কি জান্নাত যেতে পারবে? কোন এক ব্যক্তির মুখে আমি শুনলাম তারা নাকি শাস্তি ভোগ করার পরে শেষ মূহুর্তে জান্নাতে প্রবেশ করবে।এটা কতখানি সঠিক? 

উত্তর : 
কোন ব্যক্তি যদি তাওহীদ এবং রিসালাত কে স্বীকৃতি না দেয় অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কে একমাত্র মাবুদ হিসেবে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাসূল হিসেবে বিশ্বাস না করে তাহলে সে ব্যক্তি কাফের হিসাবে পরিগণিত হবে যার-কারণে সে কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না। বরং সে হবে চিরস্থায়ী জাহান্নামী।
কারণ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم أَنَّهُ قَالَ وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِى أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ يَهُودِىٌّ وَلاَ نَصْرَانِىٌّ ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِى أُرْسِلْتُ بِهِ إِلاَّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ
“যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে, সেই সত্তার কসম! এই উম্মতের যে কেউ-ইয়াহুদী হোক বা খ্রিস্টান হোক-আঁমার কথা শুনবে,অতঃপর যা দিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি তার প্রতি ঈমান আনবে না, সেই জাহান্নামবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সহিহ মুসলিম: ৪০৩)

▬▬▬▬

প্রশ্ন: মহিলা ডাক্তারের জন্য কি পুরুষ রোগীর চিকিৎসা করা বৈধ হবে? এবং পুরুষ সহকর্মীদের সাথে কি ডাক্তারি পেশা করা যাবে?

উত্তর:
ইসলামী শরিয়ার সাধারণ বিধান হল, কোন নারীর জন্য পরপুরুষকে এবং কোন পুরুষের পর নারীকে স্পর্শ করা জায়েয নয়। তবে একান্ত প্রয়োজন হলে ভিন্ন কথা।
অর্থাৎ পুরুষ ডাক্তার পুরুষ রোগীদের আর মহিলা ডাক্তার মহিলা রোগীদের চিকিৎসা করবে- এটাই ইসলামী রীতি। কিন্তু পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে, রোগীর চিকিৎসা জন্য কোন পুরুষ ডাক্তার নাই তাহলে এ অবস্থায় মহিলা ডাক্তার পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে এবং যথাসম্ভব ফিতনা সৃষ্টির ব্যাপারে সর্তক থেকে পুরুষ রোগীর চিকিৎসা করতে পারে। কিন্তু পুরুষ ডাক্তার বিদ্যমান থাকা অবস্থায় মহিলাদের জন্য পরপুরুষ রোগীর গায়ে স্পর্শ করা বা পুরুষ ডাক্তারের সহকর্মী হিসেবে থাকা বৈধ নয়। কেননা, এতে ফিতনা সৃষ্টি বা হারামে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

▬▬▬▬

প্রশ্ন: কোম্পানির বেতন ভূক্ত কর্মচারীর জন্য অফিসের কাজ করে দেয়ার পরিবর্তে কমিশনে কাজ করা কি বৈধ?

উত্তর:
কোন ব্যক্তি যখন কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে তখন তার জন্য আবশ্যক হল,  উক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির সাথে কৃত চুক্তি ও শর্তাবলী যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। সে যদি এমন কোন কাজ করে যা তার চুক্তি ও শর্তে বিপরীত তাহলে সে জন্য গুনাহগার হবে।
সুতরাং কোম্পানির শর্ত মোতাবেক সে কাজ করার পরিবর্তে যদি নিজস্ব লাভের আশায় কমিশনে কাজ করে তাহলে তা তার জন্য বৈধ হবে না। অবশ্য যদি কোম্পানির তরফ থেকে তাকে এ সুযোগ দেয়া হয় তাহলে কোন আপত্তি নাই।
আল্লাহু আলাম।
কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে বা দলীল প্রয়োজন হলে শাইখের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।
➖➖➖➖➖
উত্তর প্রদানে:
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form