আল্লাহর উপর যথাযথ ভরসা করলে কি হয় দেখুন। হাদিসটি পড়ে অবাক হবেন।

••• মহানবী মুহাম্মদ সা: থেকে গল্প শুনি •••

*** আমরা বাংলার জমিনে এক শ্রেণীর হুজুরদের কাছ থেকে সদা- সর্বদা মিথ্যা/ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন গল্প - কাহিনী শুনে থাকি ! শুনতে শুনতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি ! নির্বোধ সাধারণ মানুষের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব হুজুরেরা তাঁদের মনোরণ্জনের জন্য বানোয়াট কিস্সা- কাহিনী ডেলিভারী দিয়ে থাকেন এবং দু’ হাতে মালকড়ি তুলে নেন ! এসব ভিত্তিহীন বয়ানগুলোতে পেশাদার বক্তাদের কখনো লোকসান হয়েছে বলে শুনিনি ! 

*** আজ আমি আপনাদের সামনে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য , সত্য , বাস্তব ও নির্ভুল গল্প শোনাবো । গল্পকার হলেন বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা: । বর্ণনায় সাইয়্যিদুনা আবু হুরাইরা রা: । ছহীহুল বোখারি থেকে নেয়া ।

*** বনি ইসরাইলের এক ব্যক্তি সাক্ষী ও জামিন ব্যতীত কাউকে কর্জ দিতেন না । একদা একজন সৎ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি ব্যবসার জন্য তাঁর কাছে এক হাজার দীনার ( টাকা ) ধার চাইলেন । ঋণদাতা বললেন “ সাক্ষী নিয়ে আসুন । ঋণগ্রহীতা বললেন “ كفي بالله شهيدا” সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট ।” এবার ঋণদাতা বললেন “ জামিন নিয়ে এসো ।” ঋণগ্রহীতা জবাবে বললেন “ كفي بالله وكيلا” জামিন হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট ।” ঋণদাতা অবাক হলেও তাঁর ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য কর্জ দিলেন । 

*** ঋণদাতা কর্জ গ্রহণ করার সুনির্দিষ্ট দিবসে সমুদ্রের তীরে অপেক্ষা করতে থাকলেন । অন্যদিকে ঋণগ্রহীতা সমুদ্রের তীরে এসে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কোন ধরণের নৌযান পেতে ব্যর্থ হন । অত:পর তিনি একটি কাষ্ট খন্ডে এক হাজার দীনার পুঁতে রেখে একটি চিঠিও ভেতরে রাখলেন । তিনি লিখলেন “ সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গের কারণে নৌযান না পেয়ে আপনার প্রাপ্য এভাবেই পাঠিয়ে দিলাম । সাক্ষী ও জামিন মহান আল্লাহপাক । “ 

*** এই কাষ্ট খন্ডটি ঋণদাতার চোখে পড়লে তিনি ঘরে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য নিয়ে আসার পর দেখতে পেলেন চিঠি ও দীনারগুলো । তিনি অবাক হয়ে যান । আরো কিছু দিন পর ঋণগ্রহীতা এপারে এসে ঋণদাতার সাথে দেখা করে বললেন “ আমি আপনার পাওনা এভাবেই পাঠিয়ে ছিলাম । পেয়েছেন কিনা ? না পেয়ে থাকলে আমি এখনই দিয়ে দেবো ।” ঋণদাতা বললেন “ জ্বী, ভাই পেয়েছি ।  পুণরায় দেবেন না ।” সাইয়্যিদুনা আবু হুরাইরা রা: বলেন “ এ দু’জনের মধ্যে কার ঈমান সবচে’ শক্তিশালী ছিলো তা’ নিয়ে রসুল সা:’র সামনেই সাহাবীগণ রা: ব্যাপক আলোচনায় মেতে উঠেন ।”

*** বিশুদ্ধ নিয়ত , সদিচ্ছা , মহান আল্লাহর উপর অবিচল পূর্ণ আস্হা , বিশ্বাস , ঈমান ও ভরসা বান্দার মর্যাদা কোথায় পৌঁছাতে পারে একবার ভাবুন তো !   

*** এ গল্প থেকে শিক্ষ্যণীয় বিষয় সমূহ :
১. কর্জ প্রদান করা উত্তম আমল ।
২. ঋণ শোধ করে দেয়ার সদিচ্ছা ও বিশুদ্ধ নিয়ত বুকে লালন করলে , আল্লাহপাক পরিশোধ করার তওফিক দান করবেন । সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যদি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ অবস্হায় মারা যান, আল্লাহপাক আপনার পক্ষে ঋণ শোধ করে দেবেন । আপনার নিয়তের উপর তিনি ওয়াকিফহাল রয়েছেন । পক্ষান্তরে যে কোন অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে । 
৩. কোন হুজুরের বানোয়াট কাহিনী শুনবেন না । ঐ সব মিথ্যা কাহিনীগুলোতে শিক্ষ্যণীয় কিছুই নেই । বরং ওসব হুজুররা ঈমান ধ্বংসকারী ঘাতক ! 

*** কাউকে কর্জ প্রদানের সামর্থ আমার নেই । আল্লাহপাক যদি কখনো আমাকে এ সামর্থ দান করেন, চোখ বন্ধ  করে এ হাদিসটির উপর আমল করবো inshallah. এ নিয়তটির জন্যেও ছওয়াব লাভ করবো বলে বিশ্বাস করি ।

MQM Saifullah Mehruzzaman

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form