প্রশ্ন : “কোনো মৃত ব্যক্তির কবরের পাশে গিয়ে যদি কেও ৪০ দিন সুরা ইয়াসিন পাঠ করে তাহলে মৃত ব্যক্তির কবরের আযাব মাফ হবে।” কথাটা কতটুকু সত্য?

জীবন ঘনিষ্ট কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-পর্ব ১২

প্রশ্ন : তাসবিহ পড়া কোন আঙ্গুল থেকে শুরু করা উত্তম?

উত্তর :  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডান হাতের আঙ্গুল দ্বারা তাসবীহ গণনা করতেন-এটি সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু কোন আঙ্গুল দ্বারা সর্ব প্রথম গণনা শুরু করতেন তা হাদিসে বর্ণিত হয় নি। তাই যার যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে শুরু করবে। ইনশাআল্লাহ এতে কোন আপত্তি নাই। আল্লাহু আলাম।


প্রশ্ন : কেউ মনে কস্ট দিলে তার উপর কি কিছু সময়ের জন্য  রাগ রাখা যাবে বা বদদোয়া দেওয়া যাবে? মনের এরকম অবস্থায় কি করনীয় দয়া করে জানাবেন। 
 
উত্তর : রাগ মানুষের সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট। তাই মানুষের খারাপ আচরণে অনেক সময় রাগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু হাদিসের ভাষায় প্রকৃত বীর তো সেই ব্যক্তি যে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই অধিক উত্তম যে মানুষের খারাপ আচরণে ধৈর্য ধারণ করতে পারে এবং তাকে ক্ষমা করে দেয়।

সুতরাং কারো  উপর দুনিয়াবী ছোটখাটো বিষয়ে রাগ হলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে, তাকে ক্ষমা করার চেষ্টা করতে হবে এবং তার সাথে সালাম-কালাম বিনিময় করতে হবে। রাগের কারণে তিন দিনের অতিরিক্ত যেন কথা বন্ধ না থাকে। কারণ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, কোন মুসলিমের জন্য অন্য কোন মুসলিম ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।

তবে রাগের বশবর্তী হয়ে কোন মুসলিম ভাইকে গালাগালি করা, তার উপর লানত বা অভিশাপ বর্ষণ ও বদদুআ করা বৈধ নয়।

▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪

 প্রশ্ন : আমি এতিমখানার কিছু ছেলেদের খানা খাওয়ানোর নিয়ত করেছি। তবে আমার নিয়তে নাই যে, তারা খানা শেষে আমার জন্য দোয়া করবে কিন্তু তারা যদি সবাই মুনাজাত করে তখন আমি কি করতে পারি? আর এ ব্যপারে শরিয়ত কী বলে ? 

উত্তর : এভাবে খাওয়া-দাওয়া অনুষ্ঠান করার পরে সম্মিলিতভাবে দোয়া-মোনাজাত করার প্রচলিত রীতি টি বিদআত। এটি আমাদের সমাজের একটা ট্রেডিশন।
এই রীতি থেকে বের হয়ে আসা কর্তব্য।
কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জমানায় সাহাবায়ে কেরাম একসাথে খাদ্য গ্রহণ করে কখনো সম্মিলিত দোয়া মোনাজাত করেছেন বলে প্রমাণিত নয়।
এতিম শিশু বা তাদের পরিচালনাকারী কোন ব্যক্তি এমনটি করলে তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে।
উল্লেখ্য যে,
এতীমদেরকে দেখাশোনা করা, তাদের খরচ-পাতি দেওয়া, তাদের প্রতি যত্ন নেয়া জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম কারণ।
তাই আমাদের সকলের উচিত, যথাসম্ভব এতিমদের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
আল্লাহ তাওফীক দান করুন। আমীন।

▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪

 প্রশ্ন : “কোনো মৃত ব্যক্তির কবরের পাশে গিয়ে যদি কেও ৪০ দিন সুরা ইয়াসিন পাঠ করা হয় তাহলে মৃত ব্যক্তির কবরের আযাব মাফ হবে।” কথাটা কতটুকু সত্য?   

উত্তর : কোন ব্যক্তি যদি বেঁচে থাকা অবস্থায় কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণে আমল না করে তাহলে তার কবরের পাশে কেবল সূরা ইয়াসিন নয় যদি পূরো কুরআন কেবল ৪০ দিন নয় বরং সারা বছর তিলাওয়াত করা হয় তারপরও তার কোন কাজে লাগবে না। 
মৃতপ্রায় বা মারা গেছে এমন ব্যক্তির পাশে সূরা ইয়াসিন পড়ার হাদিসটি সহীহ নয় বরং যঈফ।
গোরস্থান কুরআন তিলাওয়াতের স্থান নয়। কুরআন মৃত মানুষের কোন উপকার করবে না। কেননা কুরআন এসেছে জীবিত মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের দিকনির্দেশনার জন্য; মৃত  মানুষের জন্য নয়। আল্লাহু আলাম
▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪▪
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ,‌ জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, 
সউদী আরব।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form