রাসূল ‎ﷺ ‏বললেন, 'তোমরা তো আমার সাথী। আমার ভাই হল তারা, ‏যারা এখনো আগমন করেনি। ‎'আমাকে না দেখেই তারা আমাকে বিশ্বাস করবে'।

একদিন মা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহুআনহা) রাসূল ﷺ এর সাথে ছিলেন। রাসূল ﷺ কে বেশ উৎফুল্ল দেখে তিনি  বললেন, 'ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করুন।'
রাসূল ﷺ আয়েশা (রাযিয়াল্লাহুআনহা )র জন্য দোআ করলেন। "হে আল্লাহ! আয়েশাকে মাফ করে দাও। তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দাও, তার আগামীর গুনাহ মাফ করে দাও, তার গোপনে করা গুনাহ মাফ করে দাও, তার প্রকাশ্যে করা গুনাহও মাফ করে দাও।"
রাসূল ﷺ এর দোআ শুনে মা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহুআনহা) এতই হাসলেন যে তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )এর কোলে ঢলে পড়লেন। রাসূল ﷺ আয়েশাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'আমার এই দোয়াকি তোমাকে আনন্দ দিয়েছে?'
মা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহুআনহা) বললেন, 'কি করে এমন দোআ কাউকে সন্তুষ্ট করতে না পারে!'
আমাদের প্রিয় নবী বললেন, 'আল্লাহর কসম! আমি আমার উম্মতের জন্য আমার প্রতিটি নামাযে এই একই দোআ করি।'(সিলসিলা সাহীহা /2254)
যে দোয়া রাসূল ﷺ উনার প্রিয়তম স্ত্রীর জন্য করেছেন, সেই একই দোয়া প্রতি নামাযে তিনি তাঁর উম্মতের জন্য করেছেন, আপনার জন্য, আমার জন্য সাধারণ ক্ষমার দোআ করলেন । 
একদা তিনি কবর যিয়ারত শেষে বললেন আহা যদি আমার ভাইদেরেক দেখতাম সাহাবারা  জিজ্ঞেস করলেন, 'ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরাকি আপনার ভাই নই?'
রাসূল ﷺ বললেন, 'তোমরা তো আমার সাথী। আমার ভাই হল তারা, যারা এখনো আগমন করেনি। 'আমাকে না দেখেই তারা আমাকে বিশ্বাস করবে'।
তাহলে আমরা পৃথিবীতে আসার পূর্বেই রাসূল ﷺ আমাদেরকে মিস করেছেনﷺ। আমরা কতোটুকু মিস করি প্রিয় নবীকে? তাঁর জন্য কেঁদেছি ক'ফোটা চোখের জল ফেলে? যে নবী আমাদের জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজে দোআ করতেন, সেই নবীর নামে আমরা দিনে ক'বার দুরুদ পড়ি? ভালোবেসে তার সুন্নাহ নিজের জীবনে কতোটা পালন করি?
এক সময় তিনি নফল নামাযরত অবস্থায় দু হাত তুলে আমার উম্মত আমার উম্মত বলে কেঁদে ফেলেন 
তখন মহান আল্লাহ জিবরীল (আলাইহিসসালাম)কে কারণ জানতে পাঠালেন যদিও তাঁর জানা আছে যে, কেন কাঁদছেন তখন তিনি কারণ জানালেন যদিও তা মহান আল্লাহ জানেন এক্ষণে মহান আল্লাহ জিবরীল (আলাইহিসসালাম ) মারফত তাঁকে জানিয়ে দেন যে,আমি তোমার উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করবো অসন্তুষ্ট করবোনা (মুসলিম)
এতেই শেষ নয় বরং ক্বিয়ামত দিবসের বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতেও  সবাই যখন হায় আমার প্রাণ হায় আমার প্রাণ বলে বলে আঙ্ককে তন্ময় হয়ে থাকবে তখন তিনি আমার উম্মত হে আমার রব! আমার উম্মত হে আমার রব! আমার উম্মত বলতে বলতে  মহান আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ জানাতে  থাকবেন।(বুখারী/7510)
 

সুপ্রিয় পাঠক!  রাসূল ﷺ একটি খেজুর গাছের ডালে ভর দিয়ে বক্তব্য দিতেন তখনও মিম্বর তৈরি হয়নি। মিম্বর তৈরি হলে পরে রাসূল ﷺ যখন মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুৎবা দিচ্ছিলেন, সাহাবারা বলেন, ডালটির ভেতর থেকে শিশুর মত অঝোরে কান্না তারা শুনতে পেয়েছেন। তাহলে জড়পদার্থরূপী একটি গাছও রাসূল ﷺ কে মিস করেছে, তার জন্য কেঁদেছে। আমরা কি বিবেকবান মানুষ হয়েও  এতোটুকু দরদ দেখাতে ব্যর্থ? 

বস্তুত একথারই স্মৃতিচারণ হয়েছে নিম্নের কবিতা গুচ্ছেঃ
ياحامدا معنى صورة عاقل    أما لك من قلب شهيد ولاسمع 
يحن إليه الجذع شوقا فمالنا   لسنابشوقه أولى من الجذع  

তবেকি আমরা আমাদের প্রণাধিক প্রিয়তম, আমাদের জন্য সর্বাধিক দরদী এহেন মহান মানুষটির জন্য কখনো কেঁদেছি? তাঁর ভালোবাসায় মনটা মজিয়ে দুই ফুটা অশ্রু ঝরাতে পেরেছি? তাঁর আদর্শের খাতিরে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করেছি? অন্তত তাঁর মান মর্যাদা নিয়ে যখন কিছু মানুষ নামের কলঙ্ক নিতান্ত অমানুষ হুলি খেলায় মেথে  উঠেছে তখনো যদি আমরা আরাম কেদারায় বসে আসমান থেকে মান্না সালওয়া অবতরণের অপেক্ষা করি তবে তার অপর নাম হবে বোকার স্বর্গে বাস যার পরিনাম হবে সাড়েসর্বনাশ।
 মহান আল্লাহ নিজ গুণে আমাদের সবাইকে হেদায়ত ও হেফাজত করুন ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের মর্যাদা রক্ষা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ব্রতী হওয়ার  তাউফীক দান করুন । সবাই পোস্টটি বেশী বেশী শেয়ার করুন, কেমন?
কবি সত্যিই বলেছেনঃ

রাসূলের অপমানে যদি কাঁদেনা তোর মন 
মুসলিম নয় মুনফিক  তুই নবীর দুশমন।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form